মানিকগঞ্জের সিংগাইরে জয়মন্টপ ইউনিয়ন বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে পাকা স্থাপনা (রেস্টুরেন্ট) নির্মাণ করে যুবদল নেতার জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ঐ নেতা জয়মন্টপ ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
সোমবার (২৬ মে) সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, জমি দখলকারী আনোয়ার হোসেন জয়মন্টপ ইউনিয়নের চর দূর্ঘাপুর এলাকার মৃত ছকেল উদ্দিনের ছেলে। তিনি জয়মন্টপ পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের দক্ষিণ পাশে নীলটেক মৌজায় আরএস ৮৭ দাগে মাত্র ৫ শতাংশ জমি ক্রয় করে তিন তলা ভবন নির্মাণ করে বসবাস করছেন। কিন্তু পাশের অন্যের জমিসহ দখল করেছেন ১০ শতাংশের বেশি পরিমান জায়গা। যেখানে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন আবু জাফর নামে এক রেস্টুরেন্ট মালিককে। সেখান থেকে মাসিক ভাড়া বাবদ বিএনপি নেতা আনোয়ার পান ৮ হাজার করে টাকা করে।
অন্যদিকে, আনোয়ারের জোরপূর্বক দখল করা ঐ জমির বৈধ মালিক দাবিদার ইদ্রিস আলী ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক ও নীলটেক গ্রামের আরজুত আলীর ছেলে। আদালত ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর শরণাপন্ন হয়েও তিনি পাননি কোনো প্রতিকার। সব বাঁধা নিষেধকে থোড়াই কেয়ার করে প্রভাব খাটিয়ে আনোয়ার হোসেন ঐ জায়গা দখল করেছেন বলে স্থানীয়রা জানান।
এদিকে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আনোয়ার তার বিল্ডিংয়ের পশ্চিম পাশ ঘেষে আরো ৫ শতাংশ জমি অবৈধভাবে দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছেন। এ নিয়ে এলাকায় তার নিজ দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যেও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এদিকে, গত বুধবার (২১ মে) জমির মালিক ইদ্রিস আলী বাদী হয়ে সিংগাইর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার বরাবর আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে ভুক্তভোগী মো. ইদ্রিস আলী বলেন, আমার বৈধ মালিকানাধীন জমি আনোয়ার হোসেন জোরপূর্বক দখল করতে গেলে আমি চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার মামলা করি। আদালত আমার পক্ষে রায় দেন এবং জায়গা বুঝিয়ে দেন। আনোয়ার সেই আদেশ অমান্য করে ঐ জমিতে স্থাপনা নির্মাণ করে ভাড়া দেন।
অভিযুক্ত মো. আনোয়ার হোসেন জমি দখলের কথা অস্বীকার করে বলেন, রেস্টুরেন্টের জায়গাসহ ওখানে আমার পৌনে ৬ শতাংশ জায়গা। আমি ভবন নির্মাণ করে বাকিটুকুতে ঘর তুলে রেস্টুরেন্টের কাছে ভাড়া দিয়েছি। এর আগে ঘটনাস্থলে ‘কমিশন’ এসেছিল; আমার পক্ষে রিপোর্ট দিয়েছে।
এ বিষয়ে অধুনালুপ্ত মানিকগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার মঈনুল ইসলাম খান শান্ত বলেন, আপনার কাছ থেকে প্রথম জানলাম। আমি বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে দেখব; সে যেই হোক, আমি কোনো অন্যায় কাজের সঙ্গে নাই।
এ ব্যাপারে সহকারী পুলিশ সুপার (সিংগাইর সার্কেল) ফাহিম আসজাদ বলেন, অভিযোগ হাতে পেয়েছি। আইনগতভাবে যতটুকু করার আমরা সেটা করব। সেই সঙ্গে যাতে আইনশৃঙ্খলার কোনো অবনতি না ঘটে, সেদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে খেয়াল রাখা হবে।