ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) অর্থনীতি বিভাগের আন্তঃসেশন ফুটবল টুর্নামেন্টে দুই দলের মধ্যে মারামারির তথ্য সংগ্রহকালে সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগ। ওই ঘটনার সংবাদ সংগ্রহে গেলে বিভাগটির শিক্ষার্থী ও বার্তা২৪–এর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি নূর ই আলমের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানান শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (১৩ জুলাই) দুপুর দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেন বিভাগটির সকল শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা।
এসময় ‘সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ মানি না, মানবো না; গণমাধ্যম রুখে দাড়াক, নির্যাতনের প্রতিবাদ হোক; যতই করো হামলা, কলম মোদের থামবে না; অপরাধ কোনটি সাংবাদিকতা নাকি হামলা?’ ইত্যাদি লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে দেখা যায়।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, গতকাল শনিবার (১২ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ২০২০–২১ ও ২০২২–২৩ শিক্ষাবর্ষের ফুটবল ম্যাচে উভয় দলের তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে মারামারির ঘটনা ঘটে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাংবাদিক ভিডিও করতে গেলে আফসানা পারভীন তীনা নামের এক শিক্ষার্থী তার ফোন কেড়ে নেয়। পরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরবর্তীতে অন্য সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে তথ্য সংগ্রহকালে উপস্থিত হলে তাদের ওপর চড়াও হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্তা২৪–এর নূর ই আলম, দৈনিক আমাদের বার্তা’র আরিফ বিল্লাহ ও দৈনিক আজকালের খবরের রবিউল আলমকে মারধর করে আহত করা হয়।
এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন— অর্থনীতি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও জুলাই–৩৬ হল ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি আফসানা পারভীন তীনা, একই বর্ষের নাহিদ হাসান, মিনহাজ, সৌরভ দত্ত, পান্না এবং ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের সাইফুল, হৃদয়, রাকিব, অজিল, মশিউর রহমান রিয়নসহ ২০–২৫ জন শিক্ষার্থী।
সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, ‘সংবাদ সংগ্রহে যেভাবে একজন সাংবাদিককে ন্যাক্কারজনকভাবে হামলা করা হয়েছে, আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে এমন ঘটনা আমরা আশা করিনি। একজন সাংবাদিকের প্রথম কাজ হয় যেকোনো ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই–বাছাই করে নিউজ করা। তথ্য সংগ্রহকালে যেয়ে যদি এরকম হামলার শিকার হতে হয়, তাহলে সাংবাদিকরা কাজ করবে কীভাবে?’
বিভাগটির ২০২০–২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও চ্যানেল আই প্রতিনিধি সাদিয়া আফরিন অমিন্তা বলেন, ‘সাংবাদিকতা কোনো অপরাধ নয়, এটি মুক্ত পেশা। যদি সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে মার খেতে হয়, সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী হয়ে এর থেকে লজ্জাজনক বিষয় আর হতে পারেনা। যারা এই হামলার সাথে জড়িত, আমরা ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।’
২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শামীম হোসেন বলেন, ‘গতকাল আমাদের সহপাঠি সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন। একজন সাংবাদিক হিসেবে অপর একজন সাংবাদিককে মারধর করা হচ্ছিলো এটা অবশ্যই একটি নিউজ। সেই ঘটনা ভিডিও করতে যাওয়া তার পেশাগত দায়িত্ব। একজন সাংবাদিককে অন্য কোনো প্রেক্ষাপটে মারা হয়েছিলো কি না তা বিষয় নয়, এখানে প্রধান বিষয় একজন সাংবাদিককে প্রহার করা হচ্ছিল, আমাদের সহপাঠি একজন সাংবাদিক হিসেবে সেটা ভিডিও করতে গেলে তাকে নির্মমভাবে প্রহার করা হয়। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। প্রশাসনের কাছে আমরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’