গেল বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষার্থীবর্ষের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। তাঁর বাসা ছিল কুমারখালী উপজেলায়। তাঁর মৃত্যুর পরদিন নিরাপদ সড়ক ও বাস সার্ভিস চালুর দাবিতে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কুমারখালী ছাত্রকল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপিতে বাস সার্ভিস চালুর জোর দাবি জানানো হয়েছিল। এতে উপাচার্য আশ্বাস দিলেও বাস্তবায়নের কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এবং সরেজমিনে খোঁজখবর করে জানা যায়, কুষ্টিয়ার কুমারখালী রুটে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বাস না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এই রুটে চলাচলকারী ওই অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা। তাদের সবার একই জিজ্ঞাসা, ‘এই রুটে প্রশাসন বাস নামাবে কবে? আমরা কি আদৌ বাস সেবা পাব?’
বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত যাতায়াতের জন্য কুষ্টিয়া-ঝিনাদহের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রুটে বাস সেবা থাকলেও ওই অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। একাধিকবার প্রশাসনকে দাবি জানানোর পরেও দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি বলে জানান তাঁরা।
কুমারখালী উপজেলার শিক্ষার্থী মো. রায়হান উদ্দিন সজীব বলেন, ‘ইবির শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ কুমারখালী উপজেলায় বসবাস করে। প্রতিদিন যাতায়াতে বিশেষ করে শীত ও বর্ষাকালে আমরা চরম দুর্ভোগে পড়ি। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস যেখানে এক জেলা থেকে আরেক জেলায় চলাচল করে, সেখানে ২০ কি.মি দূরের কুমারখালীতে বাস না থাকাটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আগে এই রুটে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস চলাচল করত। এখন আমরা দ্রুত বাস সার্ভিস চালুর দাবি জানাচ্ছি।’
কুমারখালী ছাত্রকল্যাণ সমিতির সভাপতি এস. এম. চুন্নু বলেন, ‘উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার সময় তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছিলেন। পরে প্রায় দুই মাস পর আমরা আবার পরিবহন প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি জানান, বিভিন্ন কারণে মিটিংটি অনুষ্ঠিত হয়নি। আমাদের জানানো হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। বর্তমানে প্রায় ২০০-এর বেশি শিক্ষার্থী কুমারখালী থেকে ক্যাম্পাসে নিয়মিত যাতায়াত করে। আমরা চাই, দ্রুত এই রুটে বাস চালু হোক।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. শেখ মো. আব্দুর রউফ বলেন, ‘এই রুটে এখনো কোনো বাস চলাচল করেনি এবং এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর আগামী সপ্তাহে পরিবহন পরিচালনা পরিষদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সভায় কুমারখালী রুটে বাস চালুর বিষয়টিও আলোচনায় আসবে। বাসের সময়, সামঞ্জস্যতা ও সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এছাড়াও নতুন বাস ক্রয়, অন্যান্য নতুন রুটে বাস চালুর বিষয়সহ আরও কিছু দাবি নিয়েও সভায় আলোচনা করা হবে।’