জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. শেখ গিয়াস উদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছে ক্যাম্পাস। রেজিস্ট্রারের অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ মিছিল করে এবং শেষে প্রশাসনিক ভবনের সামনে তার কুশপুত্তলিকা দাহ করে। তারা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ দাবি করে আলটিমেটামও দিয়েছে।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, ন্যায্য অভিযোগ নিয়ে রেজিস্ট্রারের কাছে গেলে তিনি উল্টো দুর্ব্যবহার করেন এবং শিক্ষার্থীকে রুম থেকে বের করে দেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামেন।

বিক্ষোভকারীদের ব্যানারে লেখা ছিল— ‘গিয়াস উদ্দিন চায় কি, গোলামি আর দালালি’, ‘আজাদি আজাদি’, ‘এক দুই তিন চার, রেজিস্ট্রার তুই গদি ছাড়’ ইত্যাদি স্লোগান।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব কিশোর আনজুম সাম্য বলেন, ‘রেজিস্ট্রার হচ্ছেন এক ধরনের উপনিবেশবাদী মানসিকতার প্রতীক। আমরা এমন মেরুদণ্ডহীন প্রশাসনের অধীনে থাকতে চাই না। যদি সময়মতো সিদ্ধান্ত না আসে, তাহলে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির দায় প্রশাসনকেই নিতে হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মাসুদ রানা বলেন, ‘আওয়ামী দোসররা এখনো ক্যাম্পাসে সক্রিয়। রেজিস্ট্রার হচ্ছেন সেই ফ্যাসিস্ট প্রশাসনের প্রতিনিধি। তাঁকে প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে সরে যেতে হবে।’

ছাত্র অধিকার পরিষদের জবি শাখার সভাপতি এ কে এম রাকিব বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে কারণ অযোগ্যদের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে। একজন একাডেমিককে রেজিস্ট্রারের মতো প্রশাসনিক পদে বসিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে এমন আচরণ মেনে নেওয়া যায় না। আমরা ইতিহাসের আশ্রয় নিতে প্রস্তুত।’
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি ইভান তাহসিব বলেন, ‘আবাসন সংকটের কথা তুললে রেজিস্ট্রার জানান, এটি প্রশাসনের দায়িত্ব নয়। একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার এমন বক্তব্য মেনে নেওয়া যায় না। দীর্ঘদিন ধরে আমরা আবাসন সমস্যায় ভুগছি। প্রশাসনের দায়িত্বহীনতা আমাদের এ অবস্থায় নিয়ে এসেছে।’
জানা যায়, সাইকেল চুরির ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানাতে একজন শিক্ষার্থীকে সঙ্গে নিয়ে রেজিস্ট্রারের কাছে যান ইভান তাহসিব। সেখানে সমস্যার সমাধান না করে রেজিস্ট্রার উল্টো তাকে অপমান করে রুম থেকে বের করে দেন।
ঘটনার প্রেক্ষিতে উত্তাল হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস। শিক্ষার্থীরা স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, রেজিস্ট্রার পদে আর ড. গিয়াস উদ্দিনকে দেখতে চায় না। দাবি মানা না হলে কঠোর কর্মসূচি আসছে— জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।