ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) কোটা সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিকাল সাড়ে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।
মানবনন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী আমির ফয়সালের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস. এম. সুইট, সহ-সমন্বয়ক তানভীর মণ্ডল, আব্দুল্লাহ আল নোমানসহ প্রমুখ।
এ সময় তাঁরা গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার ২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যতিত অন্য সকল কোটা অনতিবিলম্বে বাতিল করার দাবি জানান। এছাড়াও দাবি মানা না হলে আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সহ-সমন্বয়ক তানভীর মণ্ডল বলেন, ‘জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থান শুরু হয়েছিল কোটা সংস্কারের জন্য; কিন্তু এক বছর পেরোতে না পেরোতেই আমরা লক্ষ্য করছি কোটা প্রথা এখনো বহাল আছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষকে বলতে চাই— যে কোটার জন্য হাজার হাজার মানুষ রক্ত ঝরিয়েছে, সে কোটা যেন অনতিবিলম্বে বাতিল ঘোষণা করা হয়। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যতিত অন্য সকল কোটা তুলে নিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে যত নেক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে, সবগুলোর পেছনে এই কোটাতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা একমাত্র উদাহরণ হতে পারে। যেমন— নিষিদ্ধ ঘোষিত ইবির ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়। আমরা বলতে চাই— এই বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব গতি, চিন্তাভাবনায় চলবে।’
বিশ্ববিদ্যালয় ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এস. এম. সুইট বলেন, ‘আমাদের জুলাই অভ্যুত্থান শুরু হয়েছিল প্রচলিত কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে। পরবর্তীতে সেটা সরকার পতনের এক দফায় রূপান্তরিত হয়। এক দফার ফলাফল হিসেবে পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়। আজকের যে কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আন্দোলন, তার প্রতি আমি পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি দ্রুত কোটা সংস্কার না করা হয়, তাহলে আগামী দিনে এই আন্দোলন দুর্বার আকারে গড়ে তোলা হবে। আগের মতই যদি কোটা ব্যবস্থা থাকে, তাহলে আমি মনে করি সহযোদ্ধাদের সাথে কথা বলে আবারও আন্দোলন প্রকট করতে বাধ্য হব। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যদি বোধদয় ঘটে, তাহলে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে বলে আমি আশাবাদী।’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ভর্তিতে ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’ ও ‘ডি’ ইউনিটে বিভিন্ন কোটায় ভর্তির সুযোগপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির সময়সূচির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ জানান শিক্ষার্থীরা।