ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শহীদ জিয়াউর রহমান হলের ডাইনিংয়ে গত ৫ মাসের ২ লাখ টাকা ভর্তুকি বকেয়া থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে খাবার পরিবেশন। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন হলে থাকা শিক্ষার্থীরা।
ঈদুল আজহার দীর্ঘ ছুটি শেষে গত ১৫ তারিখ আবাসিক হল সমূহ খোলা হয়। এতে অন্যান্য হলে ডাইনিং চালু হলেও জিয়া হলে ডাইনিং চালু হয়নি। ফলে হলের শিক্ষার্থীরা খাবার না পেয়ে বাধ্য হয়ে অন্য হল ও বাইরের হোটেলগুলোতে খাচ্ছেন। এতে একদিকে তাঁদের সময় ও অর্থ দুই-ই ব্যয় হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ এভাবে চলতে থাকলে এই সংকট আরও তীব্রতর হবে।
হলের ডাইনিং সূত্রে জানা যায়, গত ৫ মাসের ২ লাখ টাকা ভর্তুকি বকেয়া থাকায় ম্যানেজার ডাইনিং বন্ধ করে দিয়েছেন। টাকা না পেলে ডাইনিংয়ে খাবার পরিবেশন সম্ভব নয় বলে সাফ জানিয়ে দেন ম্যানেজার।
হলটির আবাসিক শিক্ষার্থী মোহাম্মদ শরীফ বলেন, ‘ঈদুল আজহার ছুটি শেষে ১৫ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আবাসিক হল চালু হয়। কিন্তু অন্যান্য হলে ডাইনিং চালু হলেও জিয়া হলের ডাইনিং এখনও বন্ধ রয়েছে। এতে আমরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছি। হল প্রশাসনের এই সমস্যা দ্রুত সমাধান করা উচিত।’
হলটির ডাইনিং ম্যানেজার পায়না জানান, বিগত মেয়াদে থাকা হলের সাবেক প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শেখ এ.বি.এম জাকির হোসেনের দায়িত্ব ছাড়ার শেষ ৫ মাস ভর্তুকি না দেওয়ায় ২ লাখ টাকা বকেয়া হয়েছে। ফলে আর ভর্তুকি না পাওয়ায় ডাইনিং পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি আরও জানান, আমি হলের বর্তমান প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আব্দুল গফুর গাজীর সাথে দেখা করলে তিনি সাবেক প্রভোস্টের সাথে কথা বলে বকেয়া নিতে বলেন। কিন্তু আমি যে ধার–দেনা করে এই ৫ মাস ডাইনিং চালিয়েছি, এত টাকা ঋণ কীভাবে পরিশোধ করব? এছাড়াও কর্মচারীদের বেতন ঠিক মতো পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শেখ এ.বি.এম জাকির হোসেন বলেন, ‘উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ দায়িত্বে আসার পর থেকে আশ্বস্ত করেছেন যে, আমরা যেভাবেই হোক (হলের) আর্থিক বিষয়গুলো যেকোনো ফান্ড থেকে দিব। তবে পরে তা হয়ে ওঠেনি। ফলে আমরা বিভিন্ন সমস্যায় পড়েছি। তারপরেও হল ফান্ড থেকে ভর্তুকির সমস্যা সমাধান করা যেত কিন্তু দুটি আকস্মিক ঘটনায় তা হয়নি। যেমন— সাবমারসিবল ও ওয়াই-ফাইয়ের কাজ করা। এতে সাড়ে তিন লাখ টাকা অতিরিক্ত খরচ হয়েছে। এসব কারণে মূলত ভর্তুকি দেওয়া হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি বর্তমান প্রভোস্ট স্যারকে হল উন্নয়নে খরচ হওয়া খাতের নোটগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দিতে বলেছি। এতে খরচ হওয়া টাকা তিনি উদ্ধার করতে পারবেন।’
হলের বর্তমান প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আব্দুল গফুর গাজী বলেন, ‘আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে প্রতি মাসে ভর্তুকি দিয়ে যাওয়ার কথা বলে ম্যানেজারকে ডাইনিং চালু করতে বলেছি। আর ভর্তুকির বিষয়টি উপাচার্যকে অবগত করা হয়েছে। তিনি এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন।’