ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর রহস্যজনক হত্যাকাণ্ডের দেড় মাস পার হলেও সুষ্ঠু তদন্তে অবহেলা ও খুনিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে বিলম্ব হওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে শাখা মিল্লাতিয়ান সোসাইটি।
রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এসময় শিক্ষার্থীদের হাতে ‘বিচার নিয়ে টালবাহানা, মানি না মানবো না’, ‘সাজিদ হত্যার বিচার চাই’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে,’ ইত্যাদি লেখা প্লেকার্ড দেখা যায়।
এসময় ইবি মিল্লাতিয়ান সোসাইটির সভাপতি শাহ ফরিদ, সম্পাদক শোয়াইব, ইবি শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব মাসুদ রুমি মিথুন ও ইবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসানসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘আমাদের মেধাবী ভাই সাজিদ আবদুল্লাহর মৃত্যু ৫০ দিন পার হয়ে গেলেও প্রশাসন এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, এটা খুবই দুঃখজনক। প্রশাসন যদি অতি দ্রুত এই হত্যার বিচার না করতে পারে তাহলে প্রশাসনকে অচল করে দিবো।’
সাজিদের বন্ধু ইনসামুল ইমাম বলেন, ‘শুরুতে প্রশাসন কোনোভাবে মানতে নারাজ ছিল যে, সাজিদকে হত্যা করা হয়েছিল। পরবর্তীতে প্রমাণ হওয়ায় প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছিল যে, এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুত করবে। সাজিদের বাবা লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন যেন এই মামলা সিআইডির হাতে হস্তান্তর করা হয়; কিন্তু এখনো তা অফিসিয়ালি হস্তান্তর হয়নি। সাজিদের পরিবার থেকে মাঝে মাঝেই খোঁজখবর নেয় কিন্তু আমাদের প্রশাসন এতটাই মেরুদণ্ডহীন যে প্রশাসন শুধু আশ্বাস দিতেই জানে। সাজিদের হত্যাকারী এতই ক্ষমতাধর?’
মিল্লাতিয়ান সোসাইটির সভাপতি শাহ ফরিদ বলেন, ‘দুই মাস আজ অতিবাহিত হয়ে গেল কিন্তু এখনো কোনো দৃশ্যমান ব্যবস্থা নিতে দেখলাম না। শিক্ষার্থীদের কল্যাণে অনেক কিছু করবে এ ধরনের আশ্বাস দিয়েছে কিন্তু এই এক বছরে পুকুরে লাশ ছাড়া আর কিছুই দিতে পারেনি। আজকে আমরা আমাদের জায়গা থেকে জোরালো কণ্ঠে দাঁড়াচ্ছি, আপনারা মনে করেন আপনাদের এই ক্যাম্পাসে কেন আনা হয়েছে? আপনাদের এসির বাতাস, নরম গদিতে বসে থাকার জন্য আনা হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা বিপ্লব-পরবর্তী প্রশাসন, আপনারা কাজ করবেন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে। কিন্তু আপনারা যদি তা না করেন আপনাদের সরাতে বেশিদিন সময় লাগবে না। দোষীদের অতি দ্রুত জাতির সামনে নিয়ে আসবেন বলে আশা করছি।’
উল্লেখ্য, গত ১৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হল সংলগ্ন পুকুর থেকে সাজিদ আব্দুল্লাহর লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় আন্দোলনের ১৭ দিন পর প্রকাশিত ভিসেরা রিপোর্টে তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যার তথ্য ওঠে আসে।